পাঁচ দশক আগে সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের উক্তি হিসাবে পরিচিত ‘বাংলাদেশ একটি তলাবিহীন ঝুড়ি’ তিক্ত মনে হলেও আজ এটাই সত্যি যে, ঢাকা এখন বিশ্বব্যাপী এক গ্লোবাল টেক্সটাইল মার্কেট হিসাবে পরিচিতি পেয়েছে।

পাকিস্তানের সাময়িকী সাউথ এশিয়ার মার্চ সংখ্যায় ‘ফাস্ট ট্র্যাক’ শিরোনামের নিবন্ধে এ তথ্য উঠে এসেছে। এতে বাংলাদেশের প্রশংসা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তা উরাল আলেক্সিস জনসন আদতে ওই কুখ্যাত মন্তব্য করেছিলেন যে নতুন দেশটি একটি ‘আন্তর্জাতিক তলাবিহীন ঝুড়ি’তে পরিণত হবে। এই উক্তিটি নিয়ে কিসিঞ্জারকে ভুলভাবে দায়ী করা হয়েছে। তবে এই পটভূমি মনে করিয়ে দেয়, কিভাবে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভুল অপব্যাখ্যা করা হয়েছিল। তুলনামূলকভাবে একটি সফল জাতি হয়ে ওঠার সংগ্রামের শুরুতেই বাংলাদেশকে সব নেতিবাচক পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছিল।

২০২১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সূচকগুলো পাঁচ দশকে যে অগ্রগতি অর্জন করেছে তা অভাবনীয়। দেশটির জিডিপি এখন ৩৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০০৪ সাল থেকে এর বার্ষিক জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ৫ শতাংশ ছাড়িয়েছে, মুদ্রাস্ফীতি ৫ শতাংশ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে, রেমিট্যান্স ২০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে, সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ ২০২০ সালে ছিল ২ দশমিক ৩৩৭ বিলিয়ন ডলার, একই সঙ্গে রপ্তানি ও আমদানি ছিল যথাক্রমে ৩৩ বিলিয়ন এবং ৪৯ বিলিয়ন ডলার। তৈরি পোশাক খাত অত্যন্ত শ্রম-নিবিড় এবং দেশটির শিল্পায়নের দিকে মনোনিবেশ করার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে।

চীনের পরে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। গার্মেন্ট রপ্তানি তার উৎপাদন জিডিপির প্রায় ৪৫ শতাংশ এবং মোট জিডিপির ৭ শতাংশ। সাড়ে ৪ হাজারের বেশি পোশাক কারখানায় ৪০ লাখের বেশি মানুষ কাজ করছে, যার ৮০ শতাংশ নারী। এটি বাংলাদেশের মোট রপ্তানিতে ৮৪ শতাংশ অবদান রাখে। এইভাবে এ খাত বাংলাদেশের বৈশ্বিক প্রবণতা এবং অর্থনীতির পরিবর্তনের পথকে উন্মুক্ত করে।